যৌতুক দাবির অপরাধের দণ্ড বাড়িয়ে যৌতুক নিরোধ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ১৯৮০ সালের ‘যৌতুক নিরোধ আইন’ সংশোধনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় এই সংশোধনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলনের কক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় এ সভা শুরু হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম আইন সংশোধনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদনের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
বিদ্যমান আইনে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শাস্তির বিষয়ে কোনো বিধান নেই। তাই প্রস্তাবিত সংশোধনীতে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনকারীর শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যৌতুকের দাবিতে কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
যৌতুক প্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে এর প্রতিরোধ ও শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ১৯৮০ সালে ‘দ্য ডওরি প্রহিভিশন অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন করা হয়। বিদ্যমান এই আইনটিতে ৯টি ধারা রয়েছে।
যৌতুক দাবির শাস্তির বিষয়ে আইনের ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো বর বা বরপক্ষ কিংবা কোনো কনে বা কনেপক্ষ যদি পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে কনে বা কনেপক্ষ কিংবা বর বা বরপক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তাহলে তিনি সর্বোচ্চ পাঁচ বছর, সর্বনিম্ন এক বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন বা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এই আইনে কারাদণ্ডের বিধানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা থাকলে অর্থদণ্ডের বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনীতে অর্থদণ্ড নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি কারাদণ্ডের মেয়াদও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করা হলে তার শাস্তির বিষয়ে খসড়ায় নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো নারীর স্বামী, স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া প্রস্তাবিত খসড়ায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের বিষয়ে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, মারাত্মক জখম করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ম ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: